ডেস্ক নিউজ:

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারন্স এবং জঙ্গি দমনে সারাবিশ্বে রোল মডেল সত্ত্বেও নিজের দায়িত্বকালীন ৫ বছরে মাদক ও জঙ্গি নির্মূল করতে পারছেন না বলে স্বীকার করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

শনিবার রাজধানীর পুলিশ সদর দফতরে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি এ কথা জানান।

২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের অপরাধের পরিসংখ্যান তুলে ধরে এই সময়ে ট্রেডিশনাল ক্রাইম (গতানুগতিক অপরাধ) কমেছে বলে দাবি করেন শহীদুল হক।

পুলিশের এত সাফল্যের মধ্যে মাদক নির্মূল হচ্ছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘মাদক নির্মূল করতে পারিনি, জঙ্গিও নির্মূল করতে পারিনি। কারণ দুটোই আসক্তি।’

বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা ইয়াবা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার এলাকায় এতো বড় সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা প্রবেশ করে যা বন্ধ করা কঠিন। তারপরও ইয়াবা প্রবেশ ঠেকাতে যথেষ্ট সফলতা রয়েছে। গত এক বছরে মাদক সংক্রান্ত ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৪টি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার আছে কয়েক হাজার।’

শুধু আইন প্রয়োগ করে পুলিশ দিয়ে মাদক ঠেকানো সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সব স্তরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।’

মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্সের (কোন ছাড় না দেয়া) কথা জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্নমুখী কৌশল নিয়ে সামনে এগোচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য যেন মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে নজরদারি রয়েছে। কেউ জড়িত হলে সাধারণ মানুষের মতোই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। নির্দিষ্ট কি পরিমাণ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেই পরিসংখ্যানটা এই মুহূর্তে নেই, তবে সেই সংখ্যাটা খুবই কম।’

গত এক বছরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলা পরবর্তী সময়ে নতুন করে জঙ্গিবাদের যে উত্থান হয়েছিল, এরপর আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছি।’

শহীদুল হক বলেন, ‘২০১৭ সালে পুলিশের অভিযানের সময় ৫৭ জন জঙ্গি সুইসাইডাল ভেস্টের মাধ্যমে আত্মহত্যা করেছে। একশ’র বেশি জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। জঙ্গি দমনে পুলিশের অর্জন শুধু দেশেই নয় বিদেশেও প্রশংসিত হয়েছে।’

এছাড়া অন্যান্য ট্রেডিশনাল ক্রাইমও অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় কমেছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘২০১৬ সালে এক লাখ ৮১ হাজার ১৬৮টি মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালে মামলার সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার ৫২৯টি।’

অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ জিনিসের উদ্ধারের হার বেড়ে যাওয়ায় মামলার পরিমাণ বেড়েছে জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘পুলিশের সক্ষমতা ও কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে উদ্ধার বেড়েছে। উদ্ধারের পরিমাণ বাদ দিলে ট্রেডিশনাল ক্রাইম তুলনামূলক কমেছে।’